গতকালের শপিং করার একটি ঘটনা

31.05.2019
আমি সাধারণত শপিং করতে গেলে মেয়ে সেলসম্যান দেখলে সেই শোরুমে ভুলেও প্রবেশ করতে যাই না। এর দুটি কারণ আছে, একটি কারণ হলো "খুবই লজ্জা, সংকোচ এবং অস্বস্তি লাগে"।

আরেকটি কারণ হলো; "উনাদের সামনে ড্রেস নিয়ে বেশি সময় ধরে চিন্তা-ভাবনা করা যায় না, আবার টাকা-পয়সা বা বাজেট নিয়েও বেশি হিসাব-নিকাশ করা যায় না"। একটি মেয়ের সামনে এরকম করলে সেটা কেমন দেখায়!!😊
আমার সাধারণ ড্রেস কিনতে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেরী হয়।কয়েকটা ড্রেস দেখার পর কোনটা রেখে কোনটা নিবো এটা নিয়ে পুরো বিভ্রান্তিতে পড়ে যাই।

তাই মাঝে মাঝে ড্রেসের ছবি তুলে ছোট বোনকে পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করে বলি " দেখতো কোনটা নেয়া যায়"।
সেলসম্যান ছেলে হলে একটু রিল্যাক্স থাকা যায়। তাদের নিসংকোচে বলা যায় "ভাই আপনি একটু পরে আসেন, আমি একটু ভালো ভাবে দেখি তারপর আপনাকে ডাকছি"।

অথবা ছেলেদের সাথে বাজেট নিয়েও কথা বলা যায় "ভাই এতো টাকা দিয়ে কেনা যাবে না, টাকা নাই, আমি গরীব। আরো কমের মধ্যে কিছু দেখান.. ইত্যাদি ইত্যাদি...। অন্তত মনের কথা খুলে কথা বলা যায়।
কিন্তু একটা মেয়েকে তো আর এইসব বলা যায় না। তাই নারী সেলসম্যানসহ শোরুম আমি সব সময় এড়িয়ে চলি।

আজকে কেনাকাটা করতে বের হয়েছিলাম। প্রথমে একটা নির্দিষ্ট শোরুমের সামনে দিয়ে একবার হেঁটে চলে গেলাম। যাওয়ার সময় আড়চোখে দেখে গেলাম 'কোন মেয়ে সেলসম্যান আছে কিনা",দেখলাম নেই। যাক ভালো হয়েছে..

ফিরে এসে শো রুমে প্রবেশ করলাম। ওহ্ আল্লাহ, শোরুমে প্রবেশ করার পর ড্রেসের আড়াল থেকে এক মেয়ে এসে হাজির। আমাকে বলছে" স্যার কি চাচ্ছিলেন"? বেশ বিপদে পড়ে গেলাম।

এই পরিস্থিতিতে এখান থেকে বের হয়ে গেলেও সেটা অশোভন দেখায়।তাই বের হলাম না।

পুরোটা সময় মেয়েটি আমার পাশেই ছিল। "স্যার, এটা নিতে পারেন, এটার কাপড় ভালো"। "এইটা দেখেন স্যার,এটার রং সুন্দর"।"বড়-ছোট হলে কোন সমস্যা নেই স্যার, ফেরত দিতে পারবেন" ইত্যাদি..ইত্যাদি...
আমি উনার এইসব কথা শুনছিলাম আর কাপড় দেখছিলাম। কিন্তু কি যে দেখছিলাম সেটা আমি নিজেও জানি না।

মনে মনে শুধু বলছিলাম "আল্লাহ তাড়াতাড়ি কয়েকটা ড্রেস পছন্দ করে দাও, কিনে বের হয়ে যাই"। ঠিক ভাবে প্রাইজ ট্যাগও দেখতে পারছিলাম না, লজ্জায়।

শেষ পর্যন্ত তিনটি ড্রেস পছন্দ করলাম। পছন্দ করলাম বলতে উনিই পছন্দ করে দিলে আরকি। কয়েকটা থেকে একটু যে কালার পছন্দ করবো সেই সুযোগও নেই... উনি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।কিয়েক্টা অবস্থা!!
কাউন্টারে গিয়ে দেখি "টাকার অংক আমার বাজেটকে অনেক আগেই অতিক্রম করে ফেলছে"।

 তারপরও মানিব্যাগ থেকে এমন ভাব নিয়ে টাকা বের করলাম যেন এই টাকা আমার কাছে কিছুই না..

আসলেও কিছু না।খাই বাসায় ফিরে আম্মার একটু বকা খাবো.. তবুও কোন মেয়ের সামনে নিজেকে গরীব পরিচয় দেয়া যাবে না.. ইজ্জতের ব্যাপার..

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.