দিরিলিস আরতুগ্রুল-সেরা তুর্কি টিভি সিরিজ

 তুরস্কে টিভি সিরিজের মধ্যে সারা বিশ্বে দিরিলিস আরতুগ্ল সবচেয় সবচেয়ে জনপ্রিয়। সারাবিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষায় এই টিভি সিরিজটি ডাবিঙ করে প্রচারিত হয়।কোন কোন দেশে মুসলমানদের ইতিহাস জনসাধারণকে জানানোর জন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এই টিভি সিরিজ প্রচারিত হয়েছে।কি আছে এই টিভি সিরিজে, এর ইতিহাসটাই বা কি, এইগুলোই জানবো আজকের এই পর্বে।


🔵প্লট: দিরিলিস: আরতুগ্রুল একটি তুর্কি ঐতিহাসিক অ্যাডভেঞ্চার টিভি সিরিজ।এই সিরিজের মোট ৫টি সিজন রয়েছে,যার মোট পর্ব সংখ্যা ১৫০, আর প্রতিটি পর্বের রানটাইম প্রায় ২ ঘন্টা করে। 

ওঘুজ তুর্কিদের ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে এই সিরিজ নির্মিত হয়েছে, যেখানে ১৩ শতাব্দীর মধ্যভাগে উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা প্রথম উসমানের পিতা আরতুগ্রুল গাজীর জীবনকে তুলে ধরা হয়েছে।

মঙ্গোলীয়দের আক্রমণ ও নির্যাতন কারণে তুর্কি গোত্রগুলো মধ্যএশিয়া ছেড়ে পালিয়ে যায়। ওঘুজ তুর্কিদের মধ্যে কায়ি গোত্র চারশোটি বিশাল বেদুঈন তাবু গেড়ে আনাতলিয়ায় আশ্রয় নেয়। কিন্তু দুর্ভিক্ষের কারণে তাদেরকে এক কঠিন সময়ের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। এসকল বেদুঈনরা নতুন জীবন শুরু করার জন্য নিরাপদ এলাকা খুঁজতে থাকে। এই কায়ি গোত্রের প্রধান ছিলেন সুলায়মান শাহ, আর তার তিন পুত্রের মধ্যে একজন হলো এই আরতুগ্রুল। যে ছিল তার পিতার সবচেয়ে আস্থাভাজন একজন বীরযুদ্ধা।

এই আরতুগ্রুলকে নিয়েই ঐতিহাসিক এই সিরিজের গল্প।তার তৈরি করে দেয়া পথে হেঁটেই পরবর্তীতে ১২৯৯ সালে তার ছেলে প্রথম উসমান "উসমানীয় সাম্রাজ্য" প্রতিষ্ঠা করেন।


সিরিজের প্রথমে দেখা যায়

এরতুগ্রুল প্রায়শই তার তিন ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে সাথে নিয়ে শিকারে বের হত। এরকম এক দিন, তারা নাইটদের বহনকৃত বন্দীদের মুখোমুখি হয়। এরতুগ্রুল ও তার তিন বন্ধু সকল নাইটকে হত্যা করে হালিমা হাতুন নামের এক মেয়ে ও তার পরিবারকে উদ্ধার করে। তারা তাদের আসল পরিচয় না জেনেই এরতুগ্রুল তাদের গোত্রে নিয়ে আসে। হালিমা ও তার পরিবার সেলজুক সাম্রাজ্যের এক অভিজাত পরিবারের সদস্য ছিল। ধরা পড়ার ভয়ে, তারা তাদের আসল পরিচয় গোপন রাখে। যাই হোক, তাদের আগমনে কায়ি গোত্রে নতুন সমস্যা দেখা দেয়, 

সিরিজটি দেখে অবাক হয়ে গেলাম,ছোট একটি গোষ্ঠী ,যাদের সংখ্যা মাত্র কয়েক হাজার জন।তারা মোঙ্গলদের হাত থেকে বাঁচতে কখনো সেলজুক সাম্রাজ্যে ,কখনো দামেস্কে ঘুরে বেড়ায়। পরবর্তীতে এদের মধ্যমেই পৃথিবীর অন্যতম সফল এবং শক্তিশালী সাম্রাজ্য উসমানীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা হয়।

ঐতিহাসিক টিভি সিরিজ বা মুভিতে যা থাকে,যেমন যুদ্ধ, হত্যা,ষড়যন্ত্র,ক্ষমতা নিয়ে পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব তার সবই আছে এই সিরিজে। তবে  জিনিস আমি এখানে পাইনি।সেটা হলো যৌনতা, কোন খারাপ শব্দের ব্যবহার এবং নারীদের খারাপ ভাবে উপস্থাপন। এগুলোর কোন কিছুই এই সিরিজে নেই।

উল্টো ধর্মীয় কথা আছে প্রচুর। ইসলাম ধর্মকে এবং ইসলাম ধর্মের বাণীকে এখানে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।এই সিরিজে একটি পীরের চরিত্র আছে, নাম আল আরাবি। প্রথম সিজনে তার চরিত্রটি আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে। তার কোরআন এবং হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা কথাগুলো মনে প্রশান্তি এনে দেয়।

এখন পর্যন্ত মোট ২২টি দেশের টিভি চ্যানেলে বিভিন্ন ভাষায় সিরিজটি প্রচারিত হয়েছে এবং এখনও কিছু দেশে প্রচার হচ্ছে। মাছরাঙ্গা টিভিতে ২ এপ্রিল ২০১৭ থেকে "দিরিলিস আরতুগ্রুল" নামে এর সম্প্রচার শুরু হয়।

তবে ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে মিশর, সৌদি ও আরব আমিরাতে সরাসরিভাবে আরতুগ্রুল নিষিদ্ধ করা হয়। 

লেখাটি ভিডিও চিত্র পাবেন ইউটিউবে: দিরিলিস আরতুগ্রুল-সেরা তুর্কি টিভি সিরিজ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.