HBO তে প্রচারিত নতুন ৫ পর্বের টিভি মিনি সিরিজ। এখন পর্যন্ত এটার IMDb রেটিং ৯.৭, যা টেলিভিশন সিরিজ ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। ২৬ শে এপ্রিল,১৯৮৬ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন বর্তমান ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সংঘটিত ভয়াবহ পারমাণবিক দুর্ঘটনা নিয়ে এই সিরিজটি নির্মিত।এই পারমাণবিক দুর্ঘটনাকে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও বিপর্যয় হিসেবে গণ্য করা হয়।
এই দূর্ঘটনায় পরিবেশের যে পরিমাণ পারমাণবিক পদার্থ নিক্ষিপ্ত হয়েছিল তা ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক নিক্ষিপ্ত প্রায় পাঁচশটি পারমাণবিক বোমার সমান। এই দুর্ঘটনার ফলে উদ্ভূত পারমাণবিক ভাবে সক্রিয় মেঘটি ইউক্রেন, রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের ওপর দিয়ে উড়ে গিয়ে স্ক্যান্ডিনেভিয়া, গ্রেট ব্রিটেনে এমনকি পূর্ব আমেরিকার ওপর পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছিল।
ঘটনার সময় চেরনোবিলে প্রায় ১৪ হাজার বসতি ছিল। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই ৪ জন কর্মী মারা যান। পরবর্তীতে ২৩৭ জন মানুষ পারমাণবিক বিকিরণের ফলে অসুস্থ হয়ে পরে এবং প্রথম তিন মাসে ৩১ জন মৃত্যুবরণ করে, যাদের অধিকাংশই উদ্ধারকর্মী।
শহরের বসবাসরত লোকদের সরিয়ে নিয়ে যাবার কাজ শুরু হয় ৩৬ ঘন্টা পরে। এর পরের এক সপ্তাহ ধরে সরিয়ে নেয়া হয় আরো ৩০ হাজার লোককে - যারা বাস করতেন বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে মাত্র সাত কিলোমিটার দূরে চেরনোবিল শহরে, এবং আশপাশের গ্রামগুলোতে।এদের মধ্যে কয়েকশো লোক মারা গিয়েছিল পরবর্তী তিন মাসের মধ্যেই ।
সরকারি তথ্যমতে, দুর্ঘটনার কারণে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ লোক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন এবং তাঁদের মধ্যে ছিল ছয় লক্ষ শিশু। এই দুর্ঘটনার ফলে ক্ষতির পরিমাণ ২০০ বিলিয়ন ডলারের সমান বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে।বর্তমানে চেরনোবিল শহরটি পরিত্যক্ত এবং প্রায় ৫০ মাইল এলাকা জুড়ে বলতে গেলে কেউ বাস করে না। ঠিক কত সময় পর্যন্ত এর তেজস্ক্রিয়তা স্থায়ী হবে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তবে কোন সংখ্যাই কয়েকশ বছরের নিচে নয়। সূত্র; বিবিসি,উইকি
বাংলাদেশও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। এটা নিশ্চয়ই ভালো খবর।কিন্তু এই রকম দুর্ঘটনা বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে ঘটলে সেটা কি সামাল দেয়ার মত সক্ষমতা এই দেশের আছে? প্রশ্ন জাগে কারণ, এই দেশে ২০ তলা ভবনে আগুন লাগলে সেটা নিভানোর আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং উপরে উঠার মতো পর্যাপ্ত সিঁড়ি পর্যন্ত নেই। সে দেশে এরকম ভয়াবহ বিপর্যয় হলে সেই পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দিব,এই প্রশ্ন থেকেই যায়। তার উপর এরকম স্পর্শকাতর প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা এখনই বালিশের টাকা পর্যন্ত মেরে খাওয়া নিয়ে ব্যস্ত, তারা কিভাবে এই ধরনের বড় প্রকল্প ঠিকঠাকভাবে চালাবে!!
দয়াকরে কমেন্টে স্পাম মেসেজ দেবেন না।