Furie 2019- ভিয়েতনাম

Furie একটি ভিয়েতনামিজ মার্শাল আর্ট অ্যাকশন ধর্মী মুভি।এটি ভিয়েতনামের প্রথম মুভি যেটা আমেরিকাতে রিলিজ দেওয়া হয়।মুভিটি ভিয়েতনামের ইতিহাসে সবচেয়ে আয় করা মুভি।

এটা ছিল আমার দেখা প্রথম ভিয়েতনামিজ মুভি। খুব বেশি এক্সপেক্টেশন নিয়ে অবশ্য মুভিটি দেখতে বসি নাই। ভেবেছিলাম ভিয়েতনাম আর কত ভালো মুভিই বা বানাবে। যেহেতু বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন ভাষার মুভি দেখতে ভালো লাগে মূলত এই কারণেই মুভিটি দেখা... মুভির দেখার ভান্ডারে আরও একটি নতুন দেশ যুক্ত করা আরকি। তবে মুভিটি আমার এক্সপেক্টেশন এর থেকে অনেক অনেক ভালো না হলেও বেশ ভালো ছিল এবং বুঝতে পেরেছি আমার ধারণা ছিল ভুল....ভিয়েতনামও আসলে ভালো মুভি তৈরি করে।

আসলে পৃথিবীর অনেক দেশেই ভালো মুভি তৈরি করে। শুধু পারি না আমরা, বাংলাদেশীরা।ভালো মুভি দু-একটা হয়তো আমরাও তৈরি করি, তবে সেটাও দেখতে অনেকটা টেলিফিল্ম টেলিফিল্ম লাগে। আচ্ছা, বিদেশি মুভি গুলো দেখলে মনে হয় মুভি দেখতেছি, আর বাংলাদেশী মুভির সাউন্ড এবং ভিডিও দেখলে মনে হয় টেলিফিল্ম বা নাটক দেখতেছি, এ কারণটা কি? আমার মাঝে মাঝে খুব জানতে ইচ্ছে করে।

আচ্ছা মুভির গল্পটা একটু আগে বলি;

⭕ গল্প:Hai Phuong (মেয়ে) একজন সাবেক সন্ত্রাসী। তবে সে পরিবার থেকে বিতাড়িত... কারণ তার বাবা যখন জানতে পারে সে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত তখনই তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এরপর যখন তার (Hai) মেয়ে জন্ম নেয় তখন সে তার মেয়েকে নিয়ে শহর থেকে অনেকটা দূরে গিয়ে বসবাস করতে থাকে। ঘটনাক্রমে একদিন সেখান থেকেই তার মেয়েকে শিশু পাচারকারীরা কিডন্যাপ করে নিয়ে যায়...মেয়েকে খুজতে খুজতে সে শহরে চলে যায়... সেখানে গিয়ে প্রথমে পুলিশের সাহায্য চাইলেও সেটা খুব বেশি ফলপ্রসূ না হওয়ায়, সে নিজেই তার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য বের হয়।

⭕এটাই ছিল মুভির গল্প, খুব-সাদামাটা এবং খুব সাধারন একটি গল্প। গল্পে খুব বেশি গভীরতা নেই, নেই কোন টুইস্ট, হয়তো আগে থেকেই আঁচ করতে পারবেন শেষটা কেমন হতে পারে।তবে মুভির গল্প খুব সাধারন হলেও মুভির অ্যাকশন দৃশ্যে, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকে এবং অভিনয় ছিল এক কথায় অসাধারণ।

পুরো মুভিটা মূলত একজনকে ঘুরেই, সেটা Hai Phuong. এছাড়া অন্য চরিত্র গুলো ছিল খুবই অল্প সময়ের জন্য। তার অভিনয় ছিল অসাধারণ এবং দুর্দান্ত।মেয়েকে ফিরে পাবার জন্য তার মধ্যে যে ব্যাকুলতা প্রকাশ পেয়েছে, এর থেকে ভালো অন্য কেউ করতে পারতো বলে আমার মনে হয় না।

যেকোন মুভির ক্ষেত্রে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ.. বিশেষ করে অ্যাকশন মুভি দেখার ক্ষেত্রে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক মুভি দেখার আগ্রহকে বাড়িয়ে দিতে পারে আরো বহুগুণ। এই মুভির অ্যাকশন দৃশ্যের সাথে যখন দুর্দান্ত ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক চলবে তখন আপনি অন্য রকম উত্তেজনা অনুভব করবেন।

ভিয়েতনামিজ মুভি হলেও এই মুভির অ্যাকশন দৃশ্যগুলো পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য মার্শাল আর্ট অ্যাকশন মুভির থেকে কোন অংশে কম না। এই মুভির এতো জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে এর অ্যাকশন দৃশ্যগুলো একটি প্রধান কারণ।

এছাড়া মুভির কালার গ্রেডিং, সিনেমাটোগ্রাফি এবং কিছু ড্রোন শট ছিল অসাধারণ সুন্দর....যার মাধ্যমে ভিয়েতনামকে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। কেউ যদি আগে থেকে না জানে এটা ভিয়েতনামের নামের মুভি, তাহলে দেখার সময় সে ভাববে এটা চাইনিজ অথবা কোরিয়ান অথবা  হলিউডের কোন মুভি।

মুভিটি খুব ফাস্ট, তাই দেখার সময় ১ ঘন্টা ২৯ মিনিট কিভাবে চলে যাবে আপনি বুঝতেই পারবেন না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.