Castle in the sky (1986)

গল্পটা পাজু, সিতা এবং সিতার সাথে থাকা একটি নেকলেসকে কেন্দ্র করে।পাজু একজন খনিশ্রমিক,বয়স কত হবে ১০-১২ বছর।সে দিনের কাজ শেষ করে সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফেরার সময় হঠাৎ দেখে অদূরে আকাশ থেকে অদ্ভুত আলো নিচের দিকে নেমে আসছে।সে দৌড়ে আলোর কাছে গিয়ে দেখতে পায় একটি ছোট মেয়ে ধীরে ধীরে মাটির দিকে নেমে আসছে এবং তার গলায় শোভা পাচ্ছে একটি নেকলেসে।যে নেকলেসটি মেয়েটিকে বাতাসে ভাসিয়ে নিচের দিকে নামাচ্ছে।এই ছোট মেয়েটি হচ্ছে সীতা।


জলদস্যু, মুচকা এবং সেনাবাহিনী এরা সবাই সীতাকে তাড়া করে ফিরছে, কারণ তাদের সবারই ওই নেকলেসটি চাই।যে নেকলেসটি আকাশে ভেসে থাকা এক স্বপ্নের জগত "লাপুতা'র" চাবিকাঠি, যে জগতে আছে ওঠেল ধনম্পদ। সীতা এবং লুপিতাকে ঘিরে জলদস্যু এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে চলতে থাকে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, আর এরই মাঝে পাজু চেষ্টা করে সীতাকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করতে, এভাবেই মুভি গল্প এগিয়ে যায়।
মুভিটি স্টুডিও জিবলীর, আর এর পরিচালক হায়ায়ো মিয়াজাকি। স্টুডিও জিবলীর অন্যান্য মুভির মতো এটাতেও আছে খুব সুন্দর গল্প এবং মনমুগ্ধকর আর্ট।মুভিটা ১৯৮৬ সালের কিন্তু এর চোখ জুড়ানো গ্রাফিক্স দেখে বুঝার উপায় নেই এটা এতো পুরাতন মুভি। এটাই জিবলীর নিজস্ব আর্ট স্টাইল এবং স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। সাথে আছে অসাধারণ ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক,ইমোশনাল মুহূর্ত গুলোর সাথে যখন ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক চলতে থাকে তখন মন উদাস হয়ে যায়।

মুভিটিকে দুটি অংশে বিভক্ত করলে প্রথম অংশে দেখা যাবে সেনাবাহিনী এবং জলদস্যুর হাত থেকে সিতা এবং পাজুর পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করা আর দ্বিতীয় অংশে লুপিতা'য় অভিযানে যাওয়া। আমার কাছে প্রথম অংশটাই বেশি ভালো লেগেছে। তবে মুভিতে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে পাজু এবং সীতা এই দুইটি চরিত্রকে। যদিও চরিত্র দুটি এনিমেটেড আর্ট, কিন্তু দেখার সময় তাদের হাসি-আনন্দ, কথাবার্তা, ছুটে চলা দেখে মনে হয়েছে তারা আমার চারপাশে থাকা খুব পরিচিত দুজন মানুষ। এই দুজন নিষ্পাপ বাচ্চা ছেলেমেয়েকে দেখলে মনটা কেন যেন ভালো হয়ে যায়।আমাদের দেশের মেয়েদের মত সিতার ফ্রক পরা, তাঁর চুলগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করে বেনি করা, আবার সেই চুলকে হেয়ার ব্যান্ড দিয়ে আটকে রাখা, পাজুর সব সময় ইন করে পরিপাটি হয়ে থাকা, সাথে হ্যাট পরা এই জিনিসগুলো ছিল খুবই ভালো লাগার।

তবে মুভিতে কিছু বিষয় অজানাই রয়ে গেছে। যেমন লাপুতা কিভাবে জনশূন্য হলো, সিতার অতীতে কি হয়েছিল, মুসকা কিভাবে সিতাকে পেল,এগুলো মুভিতে দেখানো হয়নি।
কয়েকটা অদ্ভুত কথা বলি;
আমিও মাঝে মাঝে সত্যি সত্যিই ভাবি, একদিন যদি আমার সাথে এমন হতো, যেমন: একদিন জোসনা রাতে গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি, দুপাশে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। সেখান থেকে ঝিঁঝিঁ পোকা এবং অজানা আরো অনেক পোকামাকড়ের ডাক ভেসে আসছে। মাথার উপর চাঁদটি মেঘের সাথে লুকোচুরি খেলছে, শরীরকে জুড়িয়ে দিচ্ছে দখিনা মৃদু হাওয়া, আশপাশে দেখা যাচ্ছে অসংখ্য জোনাকি পোকা। হঠাৎ অদূরে দেখা যাবে কিছু একটা আকাশ থেকে নেমে এসেছে, কাছে গেলে দেখতে পাব অসম্ভব সুন্দরী একটি পরী (😜😜) দাঁড়িয়ে আছে,আমাকে বলবে,
-চলো
-কোথায়?
-অনেক দূরে
-কতদূর?
-যতদূর গেল পৃথিবীর ঝগড়াঝাঁটি, যান্ত্রিকতা, বাধা-বিপত্তি কিছুই তোমাকে ছুঁতে পারবে না।

আমি কিন্তু সত্যি সত্যিই আমি চলে যেতাম। খুব মজা হতো

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.