Dirilis Ertugrul প্রথম সিজন দেখে আমার অভিজ্ঞতা:
দিরিলিস: আরতুগ্রুল একটি তুর্কি ঐতিহাসিক অ্যাডভেঞ্চার টিভি সিরিজ।এই সিরিজের মোট ৫টি সিজন আছে,যার মোট পর্ব সংখ্যা ১৫০ আর প্রতিটি পর্বের রানটাইম প্রায় ২ঘন্টা করে। আমি গত কিছুদিনে এই সিরিজের প্রথম সিজনের ২৬ পর্ব দেখেছি।
২০১৬ এর ১৪ই নভেম্বর থেকে বাংলাদেশের একুশে টেলিভিশনে সিরিজটির বাংলা সম্প্রচার শুরু হয় "সীমান্তের সুলতান" নামে এবং একই বছর ২৩শে ডিসেম্বর এর সম্প্রচার স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশের মাছরাঙ্গা টিভিতে ২ এপ্রিল ২০১৭ থেকে "দিরিলিস আরতুগ্রুল" নামে পুনরায় এর সম্প্রচার শুরু হয়। এখন পর্যন্ত মোট ২২টি দেশের টিভি চ্যানেলে বিভিন্ন ভাষায় সিরিজটি প্রচারিত হয়েছে এবং এখনও কিছু দেশে প্রচার হচ্ছে।
তবে ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে মিশর, সৌদি ও আরব আমিরাতে সরাসরিভাবে আরতুগ্রুল নিষিদ্ধ করা হয়। মিশরের ফতোয়া বিভাগ থেকে এই সিরিজটি দেখা হারাম ঘোষণা করা হয়েছে।ফতোয়া বিভাগ বিবৃতিতে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রেসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকেও টার্গেট করে অভিযোগ করে বলেন, এরদোয়ানের উদ্দেশ্য মধ্য প্রাচ্যে অটোমান সাম্রাজ্যকে পুনরুদ্ধার করা এবং আরব দেশসমূহের উপর সার্বভৌমত্ব ফিরে পাওয়া যা পূর্বে অটোমান শাসনের অধীনে ছিল।(সূত্র:উইকি)
🔵প্লট: ওঘুজ তুর্কিদের ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে এটি নির্মিত হয়েছে, যেখানে ১৩ শতাব্দীর মধ্যভাগে উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা প্রথম উসমানের পিতা আরতুগ্রুল গাজীর জীবনকে তুলে ধরা হয়েছে।
মঙ্গোলীয়দের আক্রমণ ও নির্যাতন কারণে তুর্কি গোত্রগুলো মধ্য এশিয়া ছেড়ে পালিয়ে যায়। ওঘুজ তুর্কিদের মধ্যে কায়ি গোত্র চারশোটি বিশাল বেদুঈন তাবু গেড়ে আনাতলিয়ায় আশ্রয় নেয়। কিন্তু দুর্ভিক্ষের কারণে তাদেরকে এক কঠিন সময়ের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। এসকল বেদুঈনরা নতুন জীবন শুরু করার জন্য নিরাপদ এলাকা খুঁজতে থাকে। এই কায়ি গোত্রের প্রধান ছিলেন সুলায়মান শাহ, আর তার তিন পুত্রের মধ্যে একজন হলো এই আরতুগ্রুল। যে ছিল তার পিতার সবচেয়ে আস্থাভাজন একজন বীরযুদ্ধা।
এই আরতুগ্রুলকে নিয়েই ঐতিহাসিক এই সিরিজের গল্প।তার তৈরি করে দেয়া পথে হেঁটেই পরবর্তীতে ১২৯৯ সালে তার ছেলে প্রথম উসমান "উসমানীয় সাম্রাজ্য" প্রতিষ্ঠা করেন।
সিরিজটি দেখে অবাক হয়ে গেলাম,ছোট একটা গোষ্ঠী যাদের সংখ্যা মাত্র কয়েক হাজার জন।তারা মোঙ্গলদের হাত থেকে বাঁচতে কখনো সেলজুক সাম্রাজ্যে ,কখনো দামেস্কে ঘুরে বেড়ায়। পরবর্তীতে এদের মধ্যমেই পৃথিবীর অন্যতম সফল এবং শক্তিশালী সাম্রাজ্য উসমানীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা হয়।
ঐতিহাসিক টিভি সিরিজ বা মুভিতে যা থাকে,যেমন যুদ্ধ, হত্যা,ষড়যন্ত্র,ক্ষমতা নিয়ে পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব তার সবই আছে এই সিরিজে। তবে চারটি জিনিস আমি এখানে পাইনি।সেটা হলো যৌনতা, মদ, কোন খারাপ শব্দের ব্যবহার এবং নারীদের খারাপ ভাবে উপস্থাপন। এগুলোর কোন কিছুই এই সিরিজে নেই।
উল্টো ধর্মীয় কথা আছে প্রচুর। ইসলাম ধর্মকে এবং ইসলাম ধর্মের বাণীকে এখানে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।এই সিরিজে একটি পীরের চরিত্র আছে, নাম আল আরাবি। প্রথম সিজনে তার চরিত্রটি আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে। তার কোরআন এবং হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা কথাগুলো মনে প্রশান্তি এনে দেয়।
সিরিজের গল্পের সাথে তুলনা করলে এটি খুব বড় পরিসরে নির্মিত না।মানে হলিউডের ঐতিহাসিক সিরিজের মতো হাজার হাজার মানুষ নিয়ে যুদ্ধ, বিশাল বড় সেট, দৃষ্টিনন্দন ভিজুয়াল ইফেক্ট এখনে ওইভাবে চোখে পড়েনি। অবশ্যই এর কারণ বাজেট, এইধরনের গল্প হলিউডের মতো বড় বাজেটে হলে অবশ্যই আরো ভালো হতো। প্রথম সিজনের যুদ্ধগুলো আমার কাছে ভালো লাগেনি।কেন যেন মনে হচ্ছিল তারা যুদ্ধের রিহার্সাল করছে।তলোয়ার চালনায় ক্ষিপ্ততা ছিল কম।
এইগুলো খুব ছোট খাটো সমালোচনা।অনেকের চোখে হয়তো এইগুলো পড়বেই না।সিরিজকে খারাপ বলার জন্য এই কারণগুলো মোটেও শক্ত না।আর আমি দেখছি বাংলায় ডাবিং করা সিরিজ।ডাবিং করা কিছু কখনোই অরিজিনাল কন্টেন্টের সমমান থাকে না।ডাবিং করা মুভি বা সিরিজ দেখার সময় এর কোয়ালিটি ছাড় দিয়েই দেখা উচিত।আমি দেখেছি এর প্রথম সিজন, পরবর্তী চার সিজন হয়তো এর থেকেও অনেক ভালো।
যাইহোক যুদ্ধ,এডভেঞ্চার, থ্রীলার এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রথমদিকের ইতিহাস জানার জন্য এই সিরিজটি অবশ্যই দেখা যেতে পারে।
দিরিলিস: আরতুগ্রুল একটি তুর্কি ঐতিহাসিক অ্যাডভেঞ্চার টিভি সিরিজ।এই সিরিজের মোট ৫টি সিজন আছে,যার মোট পর্ব সংখ্যা ১৫০ আর প্রতিটি পর্বের রানটাইম প্রায় ২ঘন্টা করে। আমি গত কিছুদিনে এই সিরিজের প্রথম সিজনের ২৬ পর্ব দেখেছি।
২০১৬ এর ১৪ই নভেম্বর থেকে বাংলাদেশের একুশে টেলিভিশনে সিরিজটির বাংলা সম্প্রচার শুরু হয় "সীমান্তের সুলতান" নামে এবং একই বছর ২৩শে ডিসেম্বর এর সম্প্রচার স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশের মাছরাঙ্গা টিভিতে ২ এপ্রিল ২০১৭ থেকে "দিরিলিস আরতুগ্রুল" নামে পুনরায় এর সম্প্রচার শুরু হয়। এখন পর্যন্ত মোট ২২টি দেশের টিভি চ্যানেলে বিভিন্ন ভাষায় সিরিজটি প্রচারিত হয়েছে এবং এখনও কিছু দেশে প্রচার হচ্ছে।
তবে ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে মিশর, সৌদি ও আরব আমিরাতে সরাসরিভাবে আরতুগ্রুল নিষিদ্ধ করা হয়। মিশরের ফতোয়া বিভাগ থেকে এই সিরিজটি দেখা হারাম ঘোষণা করা হয়েছে।ফতোয়া বিভাগ বিবৃতিতে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রেসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকেও টার্গেট করে অভিযোগ করে বলেন, এরদোয়ানের উদ্দেশ্য মধ্য প্রাচ্যে অটোমান সাম্রাজ্যকে পুনরুদ্ধার করা এবং আরব দেশসমূহের উপর সার্বভৌমত্ব ফিরে পাওয়া যা পূর্বে অটোমান শাসনের অধীনে ছিল।(সূত্র:উইকি)
🔵প্লট: ওঘুজ তুর্কিদের ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে এটি নির্মিত হয়েছে, যেখানে ১৩ শতাব্দীর মধ্যভাগে উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা প্রথম উসমানের পিতা আরতুগ্রুল গাজীর জীবনকে তুলে ধরা হয়েছে।
মঙ্গোলীয়দের আক্রমণ ও নির্যাতন কারণে তুর্কি গোত্রগুলো মধ্য এশিয়া ছেড়ে পালিয়ে যায়। ওঘুজ তুর্কিদের মধ্যে কায়ি গোত্র চারশোটি বিশাল বেদুঈন তাবু গেড়ে আনাতলিয়ায় আশ্রয় নেয়। কিন্তু দুর্ভিক্ষের কারণে তাদেরকে এক কঠিন সময়ের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। এসকল বেদুঈনরা নতুন জীবন শুরু করার জন্য নিরাপদ এলাকা খুঁজতে থাকে। এই কায়ি গোত্রের প্রধান ছিলেন সুলায়মান শাহ, আর তার তিন পুত্রের মধ্যে একজন হলো এই আরতুগ্রুল। যে ছিল তার পিতার সবচেয়ে আস্থাভাজন একজন বীরযুদ্ধা।
এই আরতুগ্রুলকে নিয়েই ঐতিহাসিক এই সিরিজের গল্প।তার তৈরি করে দেয়া পথে হেঁটেই পরবর্তীতে ১২৯৯ সালে তার ছেলে প্রথম উসমান "উসমানীয় সাম্রাজ্য" প্রতিষ্ঠা করেন।
সিরিজটি দেখে অবাক হয়ে গেলাম,ছোট একটা গোষ্ঠী যাদের সংখ্যা মাত্র কয়েক হাজার জন।তারা মোঙ্গলদের হাত থেকে বাঁচতে কখনো সেলজুক সাম্রাজ্যে ,কখনো দামেস্কে ঘুরে বেড়ায়। পরবর্তীতে এদের মধ্যমেই পৃথিবীর অন্যতম সফল এবং শক্তিশালী সাম্রাজ্য উসমানীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা হয়।
ঐতিহাসিক টিভি সিরিজ বা মুভিতে যা থাকে,যেমন যুদ্ধ, হত্যা,ষড়যন্ত্র,ক্ষমতা নিয়ে পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব তার সবই আছে এই সিরিজে। তবে চারটি জিনিস আমি এখানে পাইনি।সেটা হলো যৌনতা, মদ, কোন খারাপ শব্দের ব্যবহার এবং নারীদের খারাপ ভাবে উপস্থাপন। এগুলোর কোন কিছুই এই সিরিজে নেই।
উল্টো ধর্মীয় কথা আছে প্রচুর। ইসলাম ধর্মকে এবং ইসলাম ধর্মের বাণীকে এখানে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।এই সিরিজে একটি পীরের চরিত্র আছে, নাম আল আরাবি। প্রথম সিজনে তার চরিত্রটি আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে। তার কোরআন এবং হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা কথাগুলো মনে প্রশান্তি এনে দেয়।
সিরিজের গল্পের সাথে তুলনা করলে এটি খুব বড় পরিসরে নির্মিত না।মানে হলিউডের ঐতিহাসিক সিরিজের মতো হাজার হাজার মানুষ নিয়ে যুদ্ধ, বিশাল বড় সেট, দৃষ্টিনন্দন ভিজুয়াল ইফেক্ট এখনে ওইভাবে চোখে পড়েনি। অবশ্যই এর কারণ বাজেট, এইধরনের গল্প হলিউডের মতো বড় বাজেটে হলে অবশ্যই আরো ভালো হতো। প্রথম সিজনের যুদ্ধগুলো আমার কাছে ভালো লাগেনি।কেন যেন মনে হচ্ছিল তারা যুদ্ধের রিহার্সাল করছে।তলোয়ার চালনায় ক্ষিপ্ততা ছিল কম।
এইগুলো খুব ছোট খাটো সমালোচনা।অনেকের চোখে হয়তো এইগুলো পড়বেই না।সিরিজকে খারাপ বলার জন্য এই কারণগুলো মোটেও শক্ত না।আর আমি দেখছি বাংলায় ডাবিং করা সিরিজ।ডাবিং করা কিছু কখনোই অরিজিনাল কন্টেন্টের সমমান থাকে না।ডাবিং করা মুভি বা সিরিজ দেখার সময় এর কোয়ালিটি ছাড় দিয়েই দেখা উচিত।আমি দেখেছি এর প্রথম সিজন, পরবর্তী চার সিজন হয়তো এর থেকেও অনেক ভালো।
যাইহোক যুদ্ধ,এডভেঞ্চার, থ্রীলার এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রথমদিকের ইতিহাস জানার জন্য এই সিরিজটি অবশ্যই দেখা যেতে পারে।
দয়াকরে কমেন্টে স্পাম মেসেজ দেবেন না।