Old Yeller 1957 সালে নির্মিত একটি আমেরিকান ওয়েস্টার্ন ফ্যামিলি ড্রামা মুভি। মুভিটি দেখেছি ৩-৪ দিন আগে, তবে এর ভালো লাগার রেশ এখনো রয়ে গেছে। কিছু কিছু মুভি আছে একবার দেখলে সেটা মনের মধ্যে এমন ভাবে দাগ কেটে যায় যেই দাগ আর কখনো মুছে না।এই মুভিটাও সেই ধরনের একটি। দেখার পর মনে একটা প্রশান্তির ছোঁয়া পেয়েছি,আর কিছুক্ষণের জন্য ভিন্ন এক জগৎতে হারিয়ে গেছিলাম।
আমার পুরোনো ওয়েস্টার্ন মুভি খুব পছন্দ,সেটা যদি সাদাকালো হয় তাহলে তো কথাই নেই। পুরোনো ওয়েস্টার্ন মুভি পছন্দ করার একটি কারণ হলো, এইসব মুভিতে নির্জনতা দেখা যায় আর দেখা যায় অনেক বছর আগের মানুষের জীবন যাপন । আমি ব্যাক্তি জীবনেও খুব নির্জনতা আর একাকিত্ব পছন্দ করি, বর্তমান সময়ে এমন পরিবেশ খুজে পাওয়া দুষ্কর,তাই হয়তো মুভিতেই এমন পরিবেশ খুজে বেড়াই, এরপর সেখানে কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে যাই।
এইসব কারণে মাঝে মাঝে আমি বলি "আমার যে চিন্তা ভাবনা আর ধ্যান ধারণা তাতে আমার জন্ম আরো ১০০ বা ২০০ বছর পূর্বে হওয়া উচিত ছিল, বর্তমান সময়ের সাথে আমি মানান সই না, অনেক কিছুই বুঝি না, তাই তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করি, কিন্তু সেটাও ভালো পারি না।
যাইহোক, আজাইরা কথা বাদ দিয়ে মুভির কথায় আসি। মুভির গল্পটা একটা ছোট পরিবারকে নিয়ে।বাবা-মা আর দুই ছেলেকে নিয়ে খুব ছোট্ট সুখি একটি পরিবার। ছেলে দুটির বয়স হতে পারে যথাক্রমে ১৪ এবং ১০
তারা বসবাস করে আমেরিকার টেক্সাসের সবুজ ঘেরা এক পাহাড়ের পাদদেশে। তাদের আশপাশে কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে শুধু তারাই বসবাস করে,আর কোন মানুষ নেই। এখানে তাদের প্রতিবেশী হচ্ছে সবুজ প্রকৃতি, পাহাড়, অফুরন্ত নির্জনতা আর বাতাসের গান।
এই পরিবারের যে পিতা তাকে কাজের প্রয়োজনে বেশ কিছুদিনের জন্য অনেক দূরে যেতে হয়।যাওয়ার সময় বড় ছেলে ট্রাভেস কে তার মা এবং ছোট ভাইকে দেখার দ্বায়িত্ব দিয়ে যায়।ট্রাভেস চেষ্টা করতে থাকে তার পিতার কথা মতো চলার জন্য।
একদিন খরগোশের পিছু ধাওয়া করতে করতে একটি কুকুর তাদের বাড়িতে চলে আসে এবং এসেই সেই কুকুর ওই বাড়ির ফসলের বেড়া ভেঙে ফেলে।ট্রাভেস তাই কুকুরটির উপর রেগে যায়, কিন্তু ছোট ভাই আলিস সেই কুকুরটিকে আদর করে বাড়িতে নিয়ে যায়,এই কুকুরটির নাম হচ্ছে Yeller।বড় ভাই এতে মোটেও রাজি না, কিন্তু ছোট ভাইয়ের জন্য সে কিছু করতে পারে না,তাই বাধ্য হয়ে কুকুরটিকে বাড়িতে আশ্রয় দেয়।
🔴Spoiler alert:
এক রাতে ট্রাভেস তাদের বাড়ির বারান্দায় অনেক মাংস রেখে দেয়,আর সেই মাংসের সামনে কুকুরটি বসে থাকে। সকালে উঠে সে দেখে কুকুরটি সেই মাংসের সামনে শুয়ে আছে, কিন্তু মাংসতে মুখ দেয়নি। তারপর থেকে ট্রাভেসও কুকুরটিকে আদর করে।
তারপর থেকে কুকুরটি ওই পরিবারের সদস্য হয়ে যায়,আর ওই পরিবারের বিভিন্ন বিপদের সময় কুকুরটি পরিবারের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে বিপদ থেকে রক্ষা করে।
একরাতে ওই বাড়িতে একটি নেকড়ে আক্রমন করে, তখন পরিবারের সামনে এসে দাঁড়ায় এই কুকুরটি। কুকুর আর নেকড়ের মধ্যে যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত নেকড়ে পরাজিত হয়। তবে নেকড়ের কামড়ে কুকুরটি আহত হয়।ওই পরিবারের মা বুঝতে পারে নেকড়েটি পাগল ছিল, নেকড়েটি ভাইরাসে আক্রান্ত ছিল,আর নেকড়ে যেহেতু কুকুরকে কামড় দিয়েছে সুতরাং কুকুরটিও এখন আক্রান্ত হয়েছে। একে এখন মেরে ফেলা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। কিন্তু ট্রাভেস কোন অবস্থাতেই কুকুরটিকে মারতে নারাজ।
তারা একটি বদ্ধ ঘরে কুকুরটিকে একমাস আটকে রাখে,ভাবে এইভাবে যদি কুকুরকে বাঁচানো যায়, কিন্তু কেন লাভ হয় না। শেষ পর্যন্ত কুকুরটি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পাগল হয়ে যায়, তাই ট্রাভেস তাকে গুলি করে মেরে ফেলতে বাধ্য হয়।
ভালো মুভি দেখতে চাইলে এই মুভিটা দেখতে পারেন। আপনার ১ ঘন্টা ৪০ মিনিট খুব ভালো কাটবে।
দয়াকরে কমেন্টে স্পাম মেসেজ দেবেন না।