ভাইরাস নিয়ে নির্মিত ৭ টি রুদ্ধশ্বাস সিনেমা, লিংকসহ | Top 7 Best Pandemic Movies

 ভাইরাস নিয়ে নির্মিত মুভিতে আমরা সাধারনত যা দেখেছি তার সাথে বর্তমানের করোনা পরিস্থিতির বেশ মিল খুঁজে পাওয়া যায়।এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার আগে আমরা মুভি দেখে ভাবতাম, 'ধুর, এরকম কখনো হয় নাকি !! এগুলো সবই অবাস্তব ও কাল্পনিক এবং শুধু মাত্র মুভিতেই এমন সম্ভব, বাস্তবে এরকম হওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই। কিন্তু সেই অবাস্তব এবং কাল্পনিক  ঘটনাগুলিই এখন বাস্তবে ঘটতেছে। বন্ধুরা আজ আপনাদের বলবো ভাইরাস নিয়ে নির্মিত ৭ মুভির কথা,যে মুভির সাথএ বর্তমান করোনা পরিস্থিতির অনেক মিল খুঁজে পাওয়া যায়।


সূচীপত্র (toc)

7.Carriers (2009)

IMDB:6.0

তালিকার ৭ নাম্বারে আছে ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া মুভি Carriersভাইরাস আক্রান্ত শহর ছেড়ে বাঁচার জন্য চার বন্ধু গাড়ি নিয়ে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে বেড়ায়। একদিন তাদের সাথে রাস্তায় দেখা হয় এক বাবা এবং তার মেয়ের, মেয়েটি ভাইরাসে আক্রান্ত।ওই চার বন্ধু মেয়ে এবং তার বাবাকে তাদের সাথে গাড়িতে নিতে বাধ্য হয়, এরপর তারা ছয় জন বেঁচে থাকার জন্য জনমানবহীন এক শহর থেকে আরেক শহরে ঘুরে বেড়ায়।যে শহরের বিভিন্ন স্থানে দেখা মিলে ভাইরাস আক্রান্ত মানুষের। এই ছয় জন কি পরবে শেষ পর্যন্ত বেঁচে থাকতে?  জানতে হলে টানটান উত্তেজনার এই মুভিটি দেখতে পারেন। আশা করি আপনার ১ ঘন্টা ২৪ মিনিট সময় খুব ভালো কাটবে।


6.Outbreak (1995)

IMDB:6.6 

নাম্বারে আছে ১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া মুভি Outbreak ।

মুভিতে দেখা যায় ১৯৬৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার এক জঙ্গলে কিছু আমেরিকান সৈন্য এবং স্থানীয় কিছু মানুষ এক অজানা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। যেহেতু এই ভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন নেই তাই আমেরিকানরা মৃত এবং অসুস্থদের উদ্ধার না করে পুরো এলাকাটি বোম মেরে জ্বালিয়ে দেয়। তারা ভাবে এর ফলে হয়তো ভাইরাস আর ছড়াবে না। কিন্তু ভাইরাসটি ২৮ বছর বানরের শরীরে থেকে যায়। আমেরিকার এক পশু পাচারকারী আফ্রিকা থেকে একটি বানর পাচার করে আমেরিকায় নিয়ে আসে।সেই বানরের মাধ্যমেই আমেরিকার একটি শহরে মহামারী আকারে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে। আমেরিকান সৈন্যরা চেষ্টা করতে থাকে ভাইরাসের উৎপত্তি এবং এর প্রতিশোধক বের করতে।

"আউটব্রেক" সিনেমার একটি আশ্চর্যজনক এবং হতভম্ব হবার মতো তথ্য হলো, যে ভাইরাস নিয়ে এই মুভির গল্প, সেই ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল জায়ারে সিনেমা মুক্তির সময়ে বাস্তবেই সেই ইবোলা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে।ভাইরাসের ভয়াবহতা জানতে এই মুভিটি দেখে ফেলুন।



5.World War Z (2013)

IMDB:7

তালিকার 5 নাম্বারে আছে  ২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া মুভি World War Z ।এক অজানা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে  পুরো বিশ্বে।যে ভাইরাসে আক্রান্ত কেউ স্বাভাবিক কোনো মানুষকে কামড় দিলে সেই মানুষটিও ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জম্বি হয়ে যায়৷ এভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষ জম্বি হয়ে যায়।

ব্র্যাড পিট, একজন জাতিসংঘের সাবেক ফিল্ড এজেন্ট।তার পরিবারকে নিরাপত্তা দেয়া হবে এমন নিশ্চয়তা  পাওয়ার পর সে ভাইরাসের প্রতিষেধক নিয়ে আসার দায়িত্ব নেয়।  এই জন্য তাকে যেতে হবে দক্ষিণ কোরিয়ায়, সেখান থেকে প্রতিষোধক আনতে পারলে মুক্তি পাবে মানবজাতি৷ কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়া এতো সহজ না, কারণ সারা পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে আছে জম্বিরা, তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সে কি পারবে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে প্রতিষোধক আনতে?

সে কি পারবে তার পরিবার সহ পুরো পৃথিবীকে এই অজানা ভাইরাস থেকে বাঁচাতে ? 

জানতে হলে দেখে ফেলুন এই টানটান উত্তেজনার মুভিটি।সচরাচর জম্বি মুভিতে যেমনটা আমরা দেখি সেইগুলোর থেকে এই মুভিটা পুরোপুরি আলাদা।



4.Virus 2019

IMDB:7.9

তালিকার ৪ নাম্বারে আছে মালায়লাম মুভি ভাইরাস।ভাইরাস মুভিটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। 

 ২০১৮ সালে ভারতের দক্ষিণে ছড়িয়ে পরেছিল নিপা ভাইরাস,  যার জন্য প্রাণ হারিয়েছিল অনেক মানুষ। এই রোগের উপসর্গ দেখে ডাক্তাররা ভেবেছিলো এটা  ডেঙ্গু রোগ, কিন্তু পরবর্তীতে পরিক্ষা করে দেখা যায় এটা আসলে ডেঙ্গু না,এটা হচ্ছে নিপা ভাইরাস। ভাইরাসটি ছোঁয়াচে,তাই খুব দ্রুত পুরো শহরে ছড়িয়ে পড়ে। এই মুভিটি সেই নিপা ভাইরাসের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই নির্মিত।

মুভিতে দেখানো হয় কীভাবে একটি ভাইরাস সারা শহরকে অগোছালো করে দেয়! কিভাবে মানুষের জীবন এবং স্বাস্থ্য ব্যাবস্থাকে বিপর্যস্ত করে দেয়।মুভিতে দেখানো কিছু পরিস্থিতি আমাদের বর্তমানের পরিস্থিতিতের সাথে অনেকটা মিলে যায়।



3. I Am Legend (2007)

IMDB:7.2

ক্যান্সারের ওষুধ তৈরি করতে গিয়ে একটি ভাইরাস তৈরি হয়ে যায় এবং সেই ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষ ও পশু হিংস্র হয়ে যায়,  তাদের বেশিরভাগ পরবর্তীতে মারা যায়।পুরো নিউ ওয়ার্ক সিটি ভাইরাস এ আক্রমন হয়ে বিধস্ত হয়ে যায়। বেঁচে থাকে শুধু মার্কিন সেনাবাহিনীর কর্নেল রবার্ট নেভিল  এবং তার কুকুর স্যাম।পুরো শহর জুড়ে তিনি এবং তার কুকুর স্যাম ঘুরতে থাকে মানুষের খোঁজে এবং সে তার নিজের ল্যাবে এই ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার করার চেষ্টা করতে থাকে।

মুভি দেখতে দেখতে স্যাম আর রবার্ট এর সাথে হারিয়ে যাবেন শুনশান ভয়ঙ্কর নিউইয়র্ক সিটিতে। কিছুক্ষণ পরপরই আপনার ভয় হবে, আপনি ভাবতে থাকবেন এরপর ঠিক কি হতে পারে ....



2.The Flu (2013)

IMDB:6.6

সেরা মুভির তালিকা করা হবে কিন্তু সেখানে দক্ষিণ কোরিয়ার মুভি থাকবে না,সেটা কিভাবে সম্ভব? তাই তালিকার 2 নাম্বারে আছে ২০১৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কোরিয়ান মুভি ।

সামান্য ভাইরাসের জন্য কত বড় মহামারীর মত পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে তা এই মুভি দেখলে বুঝা যায়।উত্তর কোরিয়া থেকে কিছু ইমিগ্রেন্ট দক্ষিণ কোরিয়ার বুংডং শহরে আসে। মানব পাচারকারীরা তাদেরকে একটি ট্যাংকের ভিতরে বন্ধি করে এই শহরে নিয়ে আসে।পাচারকারীদের ২জন ট্যাংকটি খুলে দেখে ভেতরের সবাই মৃত শুধু একজন ছাড়া, সেই জীবিত একজনও সেখান থেকে পালিয়ে যায় । আর  এই দুইজন কর্মীর একজন সেই ভাইরাসে আক্রান্ত হয় এবং তার কাছ থেকে ধীরে ধীরে পুরো শহরেই ভাইরাসটি ছড়িয়ে যায়।গোটা শহর পরিনত হয় মৃত্যুপুরীতে।

মুভিতে যেমন ভাইরাসের ভয়াবহতা দেখানো হয়েছে, ঠিক তেমনি দেখানো হয়েছে আবেগ। আমরা জানি কোরিয়ানরা আবেগ নিয়ে খেলতে ভালবাসে।এই মুভিতেও তার ব্যাতিক্রম নেই,   আপনি এই মুভিটি দেখতে দেখতে আবেগ তাড়িত হয়ে যাবেন এবং আপনার অজান্তেই আপনার চোখের পানিও চলে আসতে পারে। 

বর্তমানের করোনা পরিস্থিতির সাথে এই মুভির কিছুটা মিল থাকায় থ্রিলটা একটু বেশিই পাবেন।হোম কোয়ারেন্টাইনের সময়টাতে মুভিটা দেখতে পারেন।



1.Contagion (2011)

IMDB:6.7

তালিকার ১ নাম্বারে আছে ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত'স্টিভেন সোডারবার্গ' পরিচালিত  "কন্টেজিয়ন"

মুভিটি ২০১১ সালে নির্মিত হলেও ২০২০ সালের লকডাউনের সময় এই মুভিটা খুব আলোচিত হয়।এর কারণ হলো করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি, বিস্তার, ভয়াবহতার সাথে মুভিতে দেখানো ভাইরাসের পুরোপুরি মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

আপনি বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাসের কারণে যে ভয়াবহতা দেখছেন সেটাই আজ থেকে ৯ বছর আগে এই মুভিতে দেখানো হয়েছিল। অনেকের মতে এই মুভির মাধ্যমে নাকি অনেকটা ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল। জানিনা এটা সত্য না মিথ্যা।তবে মুভির গল্পের সাথে বর্তমান বিশ্বের চলমান অস্থিরতার অনেক মিল পাওয়া যায়, এটা সত্য।

কাকতালীয় এই মুভির উৎপত্তি স্থল চীনে, করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি স্থলো চীনে।মুভির শুরুতে দেখা যায়, একজন নারী হংকং থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার কয়েকদিন পর মারা যান। মারা যাওয়ার লক্ষণ দেখে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল,ডাব্এলুউএইচওই এই রোগের উৎপত্তি খুঁজতে শুরু করে। যারা রোগীর সংস্পর্শে এসেছিল, তাদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। কিন্তু তারপরও রোগ ছড়িয়ে যায়, ঠেকানো যায় না।

কি আছে এই ভাইরাসের পেছনে'? শেষ পর্যন্ত কি ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা যায়? প্রতিষোধক কি আবিস্কার হয়? ?? জানতে হলে দেখে ফেলুন ছবিটি।

আজ তাহলে এই পর্যন্তই, ভিডিওটি ভালো একটি লাইক দিবেন, আর চ্যানেলে নতুন হলে অবশ্যই চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করবেন।কথা হবে অন্য ভিডিওতে, সবাই ভালো থাকবেন,নিরাপদে থাকবেন।ধন্যবাদ।

এই লেখাটি ভিডিও আকারে পাবেন ইউটিউবে:ভাইরাস নিয়ে নির্মিত ৭ টি শ্বাসরুদ্ধকর সিনেমা, লিংকসহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.