"রেহানা মরিয়ম নূর' Rehana Maryam Noor সিনেমার অনবদ্য অর্জনে হতবাক বিশ্ব

রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমার অনবদ্য অর্জনে হতবাক বিশ্ব। কান চলচ্চিত্র উৎসবে ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশের সিনেমা ‘রেহানা মরিয়ম নূরপ্রথমবারের মতো কানের মূল পর্বে জায়গা পেয়েছে বাংলাদেশের কোনো চলচ্চিত্র।এবারের আসরে ‘আন সার্টেইন রিগার্ডস ক্যাটাগরিতে ১৫ টি দেশের ১৮ টি সিনেমা মনোনীত হয়েছে,যার মধ্যে একটি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র "রেহানা মরিয়ম নূর"

এর আগে কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় সাফল্য ছিল প্যারালাল বিভাগ ‘ডিরেক্টরস ফোর্টনা্ইট'-এ মনোনয়ন ও পুরস্কার পাওয়া৷ এবার তাকেও ছাড়িয়ে গেল ‘রেহানা মরিয়ম নূর'৷

২০০২ সালে প্যারালাল বিভাগ ‘ডিরেক্টরস ফোর্টনা্ইট'-এ মনোনয়ন পেয়ে সমালোচক পুরস্কার জিতেছিল তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না'। কানের ৭৪-তম এই আসরে প্যারালাল নয়, অফিসিয়াল বিভাগ ‘আন সার্টেইন রিগার্ডস ক্যাটাগরিতে  স্থান পেয়েছ বাংলাদেশের চলচ্চিত্র রেহানা মরিয়ম নূর

ছবির গল্প আবর্তিত হয়েছে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক রেহানা মরিয়ম নূরকে কেন্দ্র করে। মুভির গল্পে রেহানা একজন মা, মেয়ে, বোন ও শিক্ষক।এক সন্ধ্যায় কলেজ থেকে বের হবার সময় তিনি এক শিক্ষকের কাছে ছাত্রীর যৌন নিপীড়িত হবার ঘটনার একটি অংশ দেখে ফেলেন৷ 

এরপর প্রতিকার চাইতে বারবার বললেও সেই নিপীড়ত ছাত্রী রাজি হচ্ছিলেন না৷ এরপর রেহানা ওই ছাত্রীর পক্ষ হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে বাধ্য হন রেহানা। একই সময়ে তার ৬ বছরের মেয়ের বিরুদ্ধে স্কুল থেকে কিছু অভিযোগ করা হয়।এমন অবস্থায় রেহানা তথাকথিত নিয়মের বাইরে থেকে সেই ছাত্রী ও তার নিজের সন্তানের জন্য ন্যায় বিচার খুঁজতে থাকেন।মূলত এই ঘটনাকে আবর্তিত করেই ছবিটি৷

মুভির কালার টোন আমার কাছে খুব ভিন্নধর্মী মনে হয়েছে ৷ পুরো সিনেমাতেই এক ধরনের অনুজ্বল নীলচে আলো বেছে নেয়া হয়েছে৷ পুরো সিনেমাতে আলো-আঁধারির যে খেলা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, তা সিনেমার গল্পের সঙ্গেও মানানসই ছিল৷

একদিকের চারপাশের ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা নিয়ে নিজে কিছু করতে না পারার যাতনা, অন্যদিকে শিক্ষক-চিকিৎসক-মা-মেয়ে-বোন এমন নানা চরিত্রে কাজ করতে গিয়ে নারীদের প্রতিনিয়ত যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়, বাঁধন এখানে বাস্তবের রেহানা হয়ে সেই চরিত্রেগুলো খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে উঠেছেন৷, তার অভিনয় এতটাই সাবলীল ছিল যে মনেই হয়নি তিনি আসলে অভিনয় করছেন৷

আন সার্টেইন রিগার্ডস ক্যাটাগরিতে সাধারণত একটু ভিন্ন ধারার চলচ্চিত্রকে নির্বাচন করা হয়, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট বার্তা রয়েছে৷ এই বিবেচনায় রেহানা মরিয়ম নূর হয়তো সফল হবে৷

কান উৎসবে বাঙালির অর্জন শুরু হয়েছিল ঢাকার ছেলে বিমল রায়ের হাত ধরে। ১৯৫৪ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ' জেতে বিমল রায়ের ছবি ‘দো বিঘা জমিন'। পরের বছর তার আরো দু'টি ছবি কানের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে প্রদর্শিত হয়। ১৯৫৬ সালে উৎসবে সাড়া ফেলেন সত্যজিৎ রায়। তার ‘পথের পাঁচালী' পায় ‘সেরা মানবিক দলিলে'র স্বীকৃতি। এরপর থেকে কান চলচ্চিত্র উৎসবে বলা যায় নিয়মতিই ছিলেন সত্যজিৎ।

কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশী সিনেমা রেহানা মরিয়ম নূর এক গর্বের অর্জন! আশাকরি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সাফল্যের এই ধারাবাহিক ভবিষ্যতেও অখুন্ন থাকবে।

ভিডিও লিংক ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশের সিনেমা ‘রেহানা মরিয়ম নূর ‘

#RehanaMaryamNoor #CannesFilmFestival


Tags

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.