সেরা ৪টি তু্রস্কের যুদ্ধের মুভি । 4 Best Turkish Military War Movies

 তুরস্কের হিস্টোরিক্যাল ওয়ার সিনেমা এবং টিভি সিরিজ সারাবিশ্বে ব্যাপক জনপ্রিয়। তবে এর পাশাপাশি তুরস্কের মর্ডান মেলিটারি ওয়ার সিনেমা গুলোও খুব ভালো হয়। তাদের কিছু কিছু মর্ডান মেলিটারি ওয়ার আছে যেগুলো হলিউডের যুদ্ধের সিনেমা থেকে কোন অংশ কম না। আজকে আমি আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিব আমার খুব ভালো লাগার তিনটি তুরস্কের মর্ডান মেলিটারি ওয়ার ও একটি হিস্টোরিক্যাল ওয়ার সাথে সাথে। আপনি এ্যাকশন সিনেমা, যুদ্ধের সিনেমা অথবা হিস্টোরিক্যাআল ওয়ার সিনেমা যেটাই পছন্দ করুন না কেন,এই চারটি সিনেমা আপনার ভালো লাগবেই,এই নিশ্চয়তা আমি দিচ্ছি।

                                    Image Source: https://mubi.com/es/films/the-mountain-ii


সূচীপত্র (toc)


4.Valley of the Wolves: Palestine 2011

আমরা সাবাই জাননি  ২০১০ এ গাজায় ত্রান দিতে যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে আন্তর্জাতিক পানি সিমানায় এক তুর্কি জাহাজের ওপর ইসরাইলি বাহিনী হামলা করে ।যাতে ৯ জন তুর্কি নাগরিক নিহত হয়।এই মুভিটা হচ্ছে সেই ঘটনার উপর ভিত্তি করে নির্মিত।

এক তুর্কি কমান্ডো টিমকে পাঠানো হয় ইসরাইলে, সেখানে গিয়ে এক ইসরাইলি জেনারেলকে হত্যা করার জন্য,যে জেনারেল ওই তুর্কি জাহাজে হামলার জন্য দায়ী।

তুরস্কের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে ব্যয়বহুল চলচ্চিত্র হচ্ছে ভ্যালি অফ দ্য উলভস প্যালেস্টাইন। ১ ঘন্টা ৪৭ মিনিটের এই মুভিটিতে পরিপূর্ণ একশন সাসপেন্সের  স্বাদ পাবে। যারা War মুভি বা এ্যাকশন মুভি দেখতে ভালবাসেন তাদের জন্য এটা must watch  মুভি।

ইসরাইলের সৈনিকরা মাইর খায়,সেটাও আবার ইসরাইলের ভেতরেই ‌‌।এমন মুভি আপনার হাত ছাড়া করা একেবারেই উচিত হবে না।

২০১১ তারিখে তুরস্ক জুড়ে ৩৬৪ টি স্ক্রিনে চলচ্চিত্রটি দেশব্যাপী সাধারণ মুক্তি পেয়েছিল। প্রথম উইকএন্ডে বক্স অফিসে ১ নম্বরে ছিল এই মুভিটা। তবে মুভিটাকে চরম ইসরায়েল বিরোধী বলে সমালোচনা করা হয়েছে। এমনকি অনেকে এই মুভিকে নিষিদ্ধ করতেও বলেছিল।


3.Valley of the Wolves: Iraq (2006)

এই মুভিটি কিছু সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত যেমন-আমেরিকার ইরাক অভযান,আবু গারিব কারাগারে বন্দি নিযার্তন এবং তুরস্কের সৈন্য  গ্রেপ্তার। তবে মুভিটির মুল বিষয় ছিল আমেরিকা কতৃক তুরস্কের সৈন্যদের  গ্রেপ্তারের বিষয়।

আমরিকা যখন ইরাকে অভিযান চালায় ঠিক ওই সময় তুরস্কের কিছু সৈন্য দক্ষিণ ইরাকে অবস্থান করছিল। ০৪ জুলাই ২০০৩ সালে আমেরিকান সেনারা তুরস্কের ওই ঘাঁটিতে গিয়ে সকল তুর্কি সৈন্যদের এবং সিভিলিয়ানদের গ্রেপ্তার করে এবং পরে তাদের Interrogation করে।

মুভিতে দেখা যায় এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তুরস্ক তাদের একদল কমান্ডোকে ইরাকে পাঠায় আমেরিকান কর্নেল William Marshall কে হত্যা করার। এই কর্নেল হচ্ছে ওই ঘটনার মুল পরিকল্পনা করি।

চরম Action আর টানটান উত্তেজনার একটি মূভি ।আর এবার সাথে পাবেন আমেরিকান সৈন্যদের  মাইর খাওয়ার দৃশ্য।  যেটা সাধারণত কখনো দেখা যায় না।

মুভিটি কিছু সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত যেমন-আমেরিকার ইরাক অভযান,আবু গারিব কারাগারে বন্দি নিযার্তন এবং তুরস্কের সৈন্য  গ্রেপ্তার। তবে মুভিটির মুল বিষয় ছিল আমেরিকা কতৃক তুরস্কের সৈন্যদের  গ্রেপ্তারের বিষয়। এটি ওই বছরে তুরস্কের সবচেয়ে আয় করা মুভি এবং একইসাথে সবচেয়ে ব্যয়বহুল মুভির একটি।



2.The Mountain II (Dag II) 2016

একদল তুর্কি এলিট ফোর্সকে সিরিয়া সিমান্তে পাঠানো হয় এক সাংবাদিককে উদ্ধার করতে।মিশন শেষে ফেরত আসার সময় তারা দেখতে পায় কিছু ISIS ৩ জন কুর্দিকে নির্যাতন করছে।সৈন্যরা তাদের সেভ করে এবং অনেকটা দূরে তাদের গ্রামে তাদের রেখে আসতে যায়।গ্রামে গিয়ে তারা জানতে পারে এখানে আর মোট ৪০ জন মানুষ আছে।যার প্রায় সকলেই মহিলা ও শিশু । 

রাতে তাদেরকে খবর দেয়া হয় ভারি অস্ত্র নিয়ে ISIS এদিকে আসছে এবং সকালের মধ্যে ঐ গ্রামে পৌঁছে যাবে। তারা যেন ভোরে ফেরত আসে ।পরের দিন সকালে তাদের নেয়ার জন্য একটি হেলিকাপ্টার পাঠানো হয় কিন্তু সৈন্যরা না গিয়ে গ্রামের শিশুদেরকে পাঠিয়ে হয়।

American military movie দেখে যদি একঘেয়েমি লাগে তাহলে কিছুটা ভিন্ন স্বাদ পেতে এটা দেখতে পারেন। নিশ্চিত থাকতে পারেন সময়টা ভাল কাটবে।আর Mucize এর মত  এটাতেও তুরস্কের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।


1.Fetih 1453

ফেতিহ ১৪৫৩ হল একটি  ঐতিহাসিক ঘটনাভিত্তিক একশনধর্মী তুর্কী সিনেমা যা ২০১২ সালে মুক্তি পায়। এর পটভূমি ও কাহিনী পঞ্চদশ শতাব্দীর উসমানীয় সম্রাট দ্বিতীয় মুহাম্মদ অর্থাৎ মুহাম্মদ ফাতিহ এর রাজত্বকালে উসমানীয়দের দ্বারা কন্সটান্টিনোপল যা পরবর্তীতে ইস্তানবুল বিজয়ের ঘটনার উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। 

মুহাম্মদ (সা.)  ভবিষ্যত বাণী করে বলেছিলেন, একজন মহান সেনাপ্রধান এবং তার সৈন্যদল কর্তৃক কন্সটান্টিনোপল বিজিত হবে।রসুলুল্লাহ (সঃ) এর  ভবিষ্যত বাণী  যার দ্বারা পূর্ণতা পেয়েছিল তিনি হলেন দ্বিতীয় মুহাম্মদ, যাকে মুহাম্মদ আল ফাতিহ নামে ডাকা হয়।! 'মুহাম্মাদ আল ফাতিহ্' শব্দের অর্থ হচ্ছে 'বিজেতা মুহাম্মাদ'!  

তার বাবা সুলতান দ্বিতীয় মুরাদও কনস্টান্টিনোপল অবরোধ করেছিলেন কিন্তু তিনি সফল হননি।তার ছেলে মুহাম্মদ আল ফাতিহ্ ১৪৫৩ সালে কনস্টান্টিনোপল দখল করে  হয়ে যান ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সমরনায়ক!  

সিনেমাটি মুক্তি দেয়ার আঠারো দিনের মাথায় এটি তুরস্কের সবচেয়ে ব্যবসাসফল সিনেমার রেকর্ডকে ভেঙে ফেলে। বর্তমানে এটি তুর্কী ভাষার সবচেয়ে আলোচিত ও ব্যবসাসফল সিনেমা।মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই সিনেমাটির প্রায় পঁচিশ লাখ টিকিট বিক্রি হয় এবং সর্বমোট ৪.৫ কোটি ডলার আয় করে রেকর্ড ভঙ্গ করে। মুক্তির প্রায় একবছর পর ২০১৩ সালের সিনেমাটি বাংলাদেশে স্টার সিনেপ্লেক্সে "ফেতিহ ১৪৫৩: ব্যাটল অব টু এম্পায়ার্স" নামে মুক্তি পায়।

সিনেমাটি বাণিজ্যিকভাবে চলাকালীন সময়ে তুরস্কের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রেজেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের জন্য একটি বিশেষ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয় । সিনেমাটি দেখে তিনি অত্যন্ত পছন্দ করেন। অপরদিকে, সিনেমার পটভূমিতে ঐতিহাসিকভাবে বিরোধীপক্ষ হিসেবে সম্পর্ক থাকার কারণে গ্রীসে সিনেমাটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও বিতর্ক শুরু হয় । এছাড়াও গ্রীসের একটি দৈনিক পত্রিকা চলচ্চিত্রটিকে তুরষ্কের "রাজনৈতিক চক্রান্ত" হিসেবে অভিহিত করে।


YouTube Link:সেরা ৪টি তু্রস্কের যুদ্ধের মুভি । 4 Best Turkish Military War Movies ।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.