আপনি যদি ভেবে থাকেন ইন্দোনেশিয়ার এ্যাকশন মুভি এমন আহামরি কিইবা হতে পারে? তাহলে আপনার ভাবনা পুরোপুরি ভুল।আসলে ইন্দোনেশিয়াও দুর্দান্ত একশন মুভি তৈরি করতে পারে। আজকে আপনাদের সাথে এমনি ৪টি ইন্দোনেশিয়ান একশন মুভির কথা বলবো,যেগুলো দেখার পর আপনি বুঝতে পারবেন ইন্দোনেশিয়ার একশন মুভি অন্য আর দশটা ইন্ড্রাস্টির একশন মুভির থেকে কোন অংশ কম নয়, বরং অনেকাংশে এগিয়ে রয়েছে। অ্যাকশন মুভিকে তারা অন্য পর্যায় নিয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে তাদের মুভিতে হ্যান্ড টু হ্যান্ড ফাইট সিন গুলো অসাধারণ হয়ে থাকে।
Image Source:'https://theplaylist.net/night-comes-for-us-review-20181023/.সূচীপত্র (toc)
1. The Raid Redemption (2011)
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা শহরের প্রাণকেন্দ্রে একটা বিশাল ভবন।এই বিল্ডিং টা হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে ভয়ংকর ড্রাগ মাফিয়াদের নিরাপদ স্থান। এই ভবন থেকেই শহরের সব ড্রাগ ব্যবসা, খুন খারাবি পরিচালনা করেন এক ড্রাগ লর্ড,যার নাম তামা রিয়াদি। বিরোধী কোন গ্যাং তো দূরের কথা সরকারের আইন প্রয়োগকরি সংস্থাও এখানে যেতে ভয় পায়। এই ভবনটি এতোটাই সুরক্ষিত যে এই ভবনে আজ পর্যন্ত যতগুলো পুলিশি অভিযান হয়েছে তার সব ব্যর্থ হয়েছে।
তবে এইবার ওই ড্রাগ লর্ড তামা রিয়াদিকে ধরতে সার্জেন্ট জাকা ২০ জন পুলিশের এলিট ফোর্সের সদস্য নিয়ে ওই ভবনে আক্রমণ চালায়। কিন্তু ভবনের ভিতরে যাওয়ার পর তারা প্রচন্ড বাধার সম্মুখীন হয়, এবং একের পর এক সৈন্য মারা যেতে থাকে।টিম লিডার জাকা ব্যাআপ টিম চায়, কিন্তু পরে সে বুঝতে পারে এখানে কোন ব্যাকাপ টিম আসবে না,যা করতে নিজেরই করতে হবে।
অসাধারণ একটি এ্যাকশন মুভি। মুভিতে প্রথম থেকেই মারামারি শুরু হয়,যা চলে একদম শেষ পর্যন্ত।এ্যাকশন দৃশ্য গুলো এতোটাই দুর্দান্ত ও টানটান উত্তেজনার ছিল যে মুভি দেখার সময় আপনাকে শ্বাসরুদ্ধ করে রাখবে।এই একশন দৃশ্য গুলো আপনাকে স্ক্রিন থেকে চোখ সরাতে দিবে না।
অ্যাকশন সিন, হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাট এককথায় অনবদ্য ছিল। এছাড়া সিনেমাটোগ্রাফি, স্ক্রিনপ্লে, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট, সাউন্ড ইফেক্ট খুবই ভালো ছিল।বলা যায় এই মুভিটা ইন্দোনেশিয়ার মুভিকে বিশ্ব দরবারে পরিচিতি এনে দিয়েছে
2.The Raid 2 2014
এই মুভিটা দ্যা রেইড মুভির সিকোয়েল।প্রথম মুভির কয়েক ঘণ্টা পর থেকে এই মুভির কাহিনী শুরু হয়। রামা সেই অপারেশন থেকে কোনভাবে বেঁচে ফিরে আসে, এরপর ইন্টারনাল ইনভেস্টিগেশন ইউনিট এর প্রধান বুনাওয়ার রামাকে একটি আন্ডারকাভার মিশনে পাঠায়।বুনাওয়ারের মতে জাকার্তা শহরকে নিয়ন্ত্রণ করে করে থাকে কিছু শক্তিশালী ক্রিমিনাল গ্যাং সিন্ডিকেট এবং এদেরকে সহায়তা করে কিছু দূর্নীতিবাজ পুলিশ অফিসার। এই সিন্ডিকেট এবং সেই দু্র্নীতিগ্রস্থ পুলিশ অফিসারদেরকে আইনের আওতায় আনতে রামাকে আন্ডারকাভার মিশনে পাঠানো হয়।
মুভিতে গ্যাংস্টার আর অসৎ পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে রামাকে দেখানো হয়েছে। মুভির প্রথমে দেখা যায় রামার ভাই এক গ্যাংস্টার কর্তৃক খুন হয়। আর এই খুনের জের ধরেই এই মুভির গল্প শুরু হয়।
অসাধারণ একশন । আমার কাছে এই মুভির এ্যকশন দৃশ্য গুলো প্রথম মুভির থেকেও বেশি ভালো লেগেছে।কিছু কিছু এ্যাকশন দৃশ্য হয়তো আপনি রিপিট করে দেখতে চাইবেন। বিশেষ করে ট্রেনের ভিতরে একটা একটি এ্যাকলন দৃশ্য আছে,এটা সবচেয়ে বেশি দুর্দান্ত লেগেছে।
3.Headshot (2016)
এই মুভির ভিলেন লি,সে বাচ্চাদের ধরে এনে তাদেরকে ট্রেনিং করিয়ে কিলার এবং স্মাগলার বানায়। মুভির অভিনেতাকেও এই ভিলেন ছোট বেলা থেকেই এইভাবে তৈরি করেছে। কিন্তু বড় হবার পর মুভির নায়ক তার ভুল বুঝতে পারে এবং সে তার দলের কথার বাইরে যায়।এর শাস্তি স্বরূপ তাকে গুলি করে সাগর পাড়ে ফেলে রাখা হয়। এরপর তাকে হাসপাতালে আনা হলে ড, আইলিনের চিকিৎসা এবং সেবার ফলে সে কোমা থেকে জেগে উঠে। কিন্তু এতো দিনে সে সবকিছু ভুলে গিয়েছে।এমনকি সে নিজের নামটাও মনে করতে পারে না।ড, আইলন
তার নাম দেয় ইসমাইল। এরপর ধীরে ধীরে আইলনএবং ইসমাইলের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একদিন ওই হাসপাতালে সেই ভিলেনের দল আক্রমন করে এবং আইলিনকে তুলে নিয়ে যায়। ইসমাইল তখন আইলন ও তার নিজের পরিচয় খুঁজতে বের হয়।
এই মুভির অভিনেতার নাম ইকো ওয়াইস,যাকে আমরা দ্যা রেইড ওয়ান ও টুতে দেখেছি। বরাবরের মতই তার অসাধারণ অভিনয় এবং এ্যাকশন দৃশ্য গুলো ছিল অসাধারণ।আসলে ইন্দোনেশিয়ার এ্যাকশন মুভির কথা আসলে প্রথমেই আসবে ইকো ওয়সের নাম, তাকে ছাড়া ইন্দোনেশিয়ার এ্যাকশন মুভির কথা চিন্তাই করা যায় না। এই মুভির সিনেমাটোগ্রাফি এবং বিজিএম খুবই ভালো লেগেছে।যারা অ্যাকশন মুভি পছন্দ করেন তারা এই মুভিটা অবশ্যই দেখবেন।
4.The Night Comes for Us (2018)
দক্ষিন এশিয়ার একটি কুখ্যাত গ্যাংস্টার গ্রুপকে নিয়ে এই মুভি গল্প,যার নাম সাউথ ইষ্ট এশিয়ান ট্রায়াড -এই গ্রপ হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার সবচাইতে বড় এবং রুথলেস ট্রায়াড! তারা মুলত ইলিগ্যাল ড্রাগ, উইপন এবং মানব পাচার করে থাকে। ইন্দোনেশিয়ার এক গ্রামের কিছু লোকাল ওই গ্রুপের শিপমেন্ট থেকে ড্রাগস চুরি করে বিক্রি করে দেয়।এর কারনে ওই গ্রামটাকে ধ্বংস করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়! আর এই কাজের দ্বায়িত্ব দেয়া হয় ইথো নামের একজনকে।
ওই গ্রামটাকে সে ধ্বংস করে দিলেও সেখানে থাকা ছোট্ট এক মেয়েকে সে মারতে পারেনি।উল্টো তার সহযোগীদেরকে খুন করে সেই ওই মেয়েটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়! এর ফলে ট্রয়াল এবং এর প্রতিটি ব্রান্চ ইথোকে হননে হয়ে খোঁজতে থাকে।
মুভির এ্যকশন দৃশ্য, সিনেমাটোগ্রাফি,বিজিএম, ভিজুয়াল ইফেক্ট অসাধারণ সুন্দর ছিল।পুরো মুভিটাই অ্যাকশন এবং ভায়োল্যান্সে ঠাসা! কিছু ভায়োল্যান্স আছে যা বেশ শকিং! আবার কিছু ফাইটিং দৃশ্য ছিল মারাত্মক ইনটেন্স লেভেলের!এই মুভিতেও ইকো উয়াইস অসাধারণ অভিনয় করেছে। তার মার্শাল আর্টের দক্ষতা দেখলে সত্যিই অবাক লাগে এতটাই অসাধারণঅধিক সংখ্যক ভায়োলেন্স,রক্তপাত,কাটকাটি,লেডি ফাইটিং যারা পছন্দ করেন তাদের জন্য এটা সেরার সেরা
সুন্দর লেখা
উত্তরমুছুনদয়াকরে কমেন্টে স্পাম মেসেজ দেবেন না।