ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কতৃক বাংলাদেশি হত্যা

গতকাল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ বাংলাদেশি দুই জন‌ গরু-ছাগলকে গুলি করে হত্যা করেছে।জি,রাষ্ট্র এদের গরু ছাগলই ভাবে, যদি মানুষ ভাবতো তাহলে প্রতিনিয়ত ঘটা এরকম হত্যাকান্ডের জোরালো প্রতিবাদ করতে দেখতাম।

বেসরকারি সংস্থা অধিকারের হিসেব অনুসারে ২০০০ সালের পর থেকে গত ১৮ বছরে বিএসএফ সৈন্যদের হাতে ১,১৩৬ জন নিহত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছে ২০০৬ সালে, ১৫৫ জন।

অধিকার বলছে, বিএসএফের হাতে গত ১৮ বছরে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ১,৩৬০ আর সবচেয়ে বেশি অপহরণ হয়েছে ওই একই বছরে (২০০৬), ১৬০টি। তারপরে ২০১৩ সালে, ১২৭টি।

গত এক দশকে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৫ নারী। তাছাড়া বিএসএফ কর্তৃক অপহরণের শিকার হয়েছে ৯৩৩ এবং নিখোঁজ হয়েছে ১৮৬ জন।

এক নজরে বিগত ২১ বছরের (১৯৯৬-২০১৭) সীমান্তহত্যা
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও বিবিসির তথ্য অনুযায়ী ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ২২ বছরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ১ হাজার ৩২৯ জন মানুষের প্রাণ গেছে।
১৯৯৬ সালে ১৩০টি হামলায় ১৩ জন।
১৯৯৭ সালে ৩৯টি ঘটনায় ১১ জন।
১৯৯৮ সালে ৫৬টি ঘটনায় ২৩ জন।
১৯৯৯ সালে ৪৩টি ঘটনায় ৩৩ জন।
২০০০ সালে ৪২টি ঘটনায় ৩৯ জন।
২০০১ সালে ৯৪ জন।
২০০২ সালে ১০৫ জন।
২০০৩ সালে ৪৩ জন।
২০০৪ সালে ১৩৫ জন।
২০০৫ সালে ১০৪ জন।
২০০৬ সালে ১৪৬ জন।
২০০৭ সালে ১২০ জন।
২০০৮ সালে ৬২ জন।
২০০৯ সালে ৯৬ জন।
২০১০ সালে ৭৪ জন।
২০১১ সালে ৩১ জন।
২০১২ সালে ৩৮ জন।
২০১৩ সালে ২৯ জন।
২০১৪ সালে ৩৩ জন।
২০১৫ সালে ৪৫ জন।
২০১৬ সালে ৩০ জন।
২০১৭ সালে ২৫ জন।

আমি ভেবে অবাক হয়ে যাই, একটি স্বাধীন দেশের নাগরিকরা বিএসএফ কর্তৃক লাগাতার লন্ঠন, হত্যা, ধর্ষিত হচ্ছে অথচ আশ্চর্যজনক ভাবে এই দেশের সরকার সবসময় নীরব থাকে। অবশ্য নীরব থাকার এই যে রেওয়াজ এটা কিন্তু নতুন না। বহু বছর আগে থেকেই এরকম হয়ে আসছে, সেটা এই দেশের যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন।

ভারত তার সীমান্তে শুট ইন সাইড নীতি অনুসরণ করে ,মানে দেখামাত্রই গুলি করা। কিন্তু তাদের এই নীতি শুধু বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্তই সীমাবদ্ধ।কারণ ভারতের সাথে সীমান্ত কিন্তু নেপাল, ভুটান, চীন এবং পাকিস্তানেরও আছে... কিন্তু ওই দেশগুলোর সাথে ভারতীয়রা দেখা মাত্র গুলি করার করার সাহস পায় না বা করে না।পাকিস্তানের সাথে ভারতের এত বৈরী সম্পর্ক থাকার পরও এরকম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে না।

শুধু ভারতই আমাদের সাথে এরকম করে তা কিন্তু না, মায়ানমার সীমান্তেও সেই একই চিত্র দেখা যায়...সীমান্তে মানুষ মারা যায় আর আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিজিবি ব্যস্ত থাকে লাশ ফেরত আনা অথবা পতাকা বৈঠক নিয়ে। যেটাতে তারা খুব পারদর্শী।

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মত এত বিপদজনক সীমান্ত ইসরাইল-ফিলিস্তিন, মেক্সিকো-আমেরিকা ছাড়া অন্য কোন দেশের সাথে আছে কিনা আমার জানা নেই।ফিলিস্তিন-ইসরাইল বা মেক্সিকো-আমেরিকা সীমান্ত বিপদজনক (তাই বলে ভারতের মতো মন চাইলে গুলি করে মারলাম, এরকম বিপদজনক না) হওয়ার কারণ আমরা সবাই জানি। কিন্তু ভারতের সাথে বাংলাদেশের সীমান্ত এত বিপদজনক হওয়ার কারণ খুঁজে পাই না।

হতে পারে ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আপন‌ ভাইয়ের মতো... অথবা স্বামী-স্ত্রীর মতো অথবা অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ এই কারণে..


https://www.bbc.com/bengali/news-44794215

https://bn.wikipedia.org/wiki/বাংলাদেশ-ভারত_সীমান্তে_হত্যা

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.